২০০৬ সনের ১৯নং আইন-
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায়কতিপয় বিরোধ ও বিবাদের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালতগঠনকল্পে প্রনীত আইনঃ
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন এবং প্রয়োগ :
(ক) এই আইন গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে।
(খ) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
(গ) ইহা কেবলমাত্র ইউনিয়নের এখতিয়ারভূক্ত এলাকায় প্রযোজ্য হইবে।
২। সংজ্ঞা বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে এই আইনে -
(ক) ‘‘আমলযোগ্য অপরাধ’’ অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধিতে সংজ্ঞায়িত Cognizable Offence;
(খ) ‘‘ ইউনিয়ন’’ অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983
(Ordinance no . LI of 1983) এরsection 2 এরclause (26) এ সংজ্ঞায়িত ইউনিয়ন:
(গ) ‘‘ইউনিয়ন পরিষদ’’ অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance,
1983(Ordinance no . LI of 1983) এরsection 2 এরclause (27) এ সংজ্ঞায়িত
ইউনিয়ন পরিষদ:
(ঘ) ‘‘ এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ’’ অর্থ যে সহকারী জজের এখতিয়ার ভূক্ত সীমানার মধ্যে
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নটি অবস্থিত সেই সহকারী জজ এবং যেক্ষেত্রে অনুরূপ এখতিয়ার সম্পন্ন
একাধিক সহকারী জজ রহিয়াছেন সেই ক্ষেত্রে অনুরূপ কনিষ্ঠতম সহকারী জজ।
(ঙ) ‘‘গ্রাম আদালত’’ অর্থ ধারা ৫ এর অধীন গঠিত গ্রাম আদালত;
(চ) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান;
(ছ) ‘‘তফসিল’’ অর্থ এই আইনের তফসিল;
(জ) ‘‘দন্ডবিধি’’ অর্থ Penal Code,1860 (Act XLV of 1860);
(ঝ) ‘‘দেওয়ানী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Civil procedure,1908 (Act V of 1908);
(ঞ) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(ট) ‘‘পক্ষ’’ অর্থে এমন কোন ব্যক্তিঅন্তভূক্ত হইবে, যাহার উপস্থিতি কোন বিবাদের সঠিক মীমাংসার জন্যপ্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয়, এবং গ্রাম আদালত যাহাকে অনুরূপ বিবাদেরএকটি পক্ষ হিসাবে সংযুক্ত করে;
(ঠ) ‘‘ফৌজদারী কাযবিধি’’ অর্থ Code of Criminal procedure, 1898 (Act V of 1898);
(ড) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রনীত বিধি;
(ঢ) ‘‘সিদ্ধান্ত’’ অর্থ গ্রাম আদালতের কোন সিদ্ধান্ত।
৩। গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলাঃ
(১) ফৌজদারী কার্যবিধি এবং দেওয়ানী কার্যবিধিতে যাহাই কিছুই থাকুক নাকেন তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত ফৌজদারী মামলা এবংদ্বিতীয় অংশে বর্নিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত দেওয়ানী মামলা , অতঃপর ভিন্ন রকমবিধান না থাকিলে, গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচার যোগ্য হইবে এবং কোন ফৌজদারী বাদেওয়ানী আদালতের অনুরূপ কোন মামলা বা মোকদ্দমার বিচার করার এখতিয়ার থাকিবেনা।
(২) গ্রাম আদালত কর্তৃক তপসিলের প্রথম অংশে বর্নিত কোন অপরাধের সহিত কোনমামলার বিচার্য হইবে না যদি উক্ত মামলার আমলযোগ্য কোন অপরাধের দায়ে দোষীসাব্যস্ত হইয়া ইতোপূর্বে গ্রাম আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন, অথবাতপসিলের দ্বিতীয়াংশে বর্নিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত কোন মামলাও গ্রামআদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে না, যদি-
(ক) উক্ত মামলায় কোন নাবালকের স্বার্থ জড়িত থাকে;
(খ) বিবাদের পক্ষগনের মধ্যে সম্পাদিত কোন চুক্তিতে সালিশের বা বিরোধ নিস্পত্তির বিধান থাকে;
(গ) সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা কর্তব্য পালনরত কোন সরকারী কর্মচারী উক্ত বিবাদের কোন পক্ষ হয়।
(৩) যে স্থাবর সম্পত্তির দখল অর্পন করিবার জন্য গ্রাম আদালত কর্তৃক আদেশপ্রদান করা হইয়াছে, ঐ স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য বাউহা দখল পুনরুদ্ধারের জন্য কোন মোকদ্দমা বা কার্যধারার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে না।
৪। গ্রাম আদালত গঠনের আবেদনঃ
(১) যে ক্ষেত্রে এই আইনের অধীন কোন মামলা গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য হয় সেই ক্ষেত্রে বিরোধের যে কোন পক্ষ উক্ত মামলা বিচরের নিমিত্তগ্রাম আদালত গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট, নির্ধারিত পদ্ধতিতে , আবেদন করিতে পারিবেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান , লিখিত কারন দর্শাইয়া উক্ত আবেদনটি নাকচ না করিলে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে একটিগ্রাম আদালত গঠন করিবার উদ্যোগ গ্রহন করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১)এর অধীন আবেদন মঞ্জুরের আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তিউক্ত আদেশের বিরুদ্ধে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে , এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে রিভিশন করিতে পারিবেন।
৫। গ্রাম আদালত গঠন, ইত্যাদিঃ
(১)একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক মনোনিত ২ জন করিয়া মোট ৪জন সদস্য লইয়া গ্রাম আদালত গঠিত হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনিত ২জন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হইতে হইবে।
(২) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রামআদালতের চেয়ারম্যান হইবেন, তবে যে ক্ষেত্রে তিনি কোন কারন বশত : চেয়ারম্যানহিসেবে দায়িত্ব পালন করিতে অসমর্থ হন কিংবা তাহার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে কোনপক্ষ কর্তৃক প্রশ্ন উত্থাপিত হয় সেই ক্ষেত্রে ,নির্ধানিত পদ্ধতিতে ,উপ-ধারা (১)এ উল্লিক্ষিত সদস্য ব্যতীত উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের অন্য কোন সদস্যগ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হইবেন।
(৩) বিবাদের কোন পক্ষে যদি একাধিক ব্যক্তিথাকেন, তবে চেয়ারম্যান উক্তপক্ষভূক্ত ব্যক্তিগনকে তাহাদের পক্ষের জন্য ২জনসদস্য মনোনীত করিতে আহবান জানাইবেন এবং যদি তাঁহারা অনুরূপ মনোনয়ন দানেব্যর্থ হন তবে তিনি উক্ত ব্যক্তিগনের মধ্য হইতে যে কোন একজনকে সদস্য মনোনয়নকরিবার জন্য ক্ষমতা প্রদান করিবেন এবং তদানুযায়ী অনুরূপ ক্ষমতা প্রাপ্তব্যক্তি সদস্য মনোনয়ন করিবেন।
(৪) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেনবিবাদের কোন পক্ষ চেয়ারম্যানের অনুমতি লইয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের পরিবর্তেঅন্য কোন ব্যক্তিকে গ্রাম আদালতের সদস্য হিসাবে মনোনিত করিতে পারিবে।
(৫) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুইথাকুক না কেন যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সদস্য মনোনিত করা সম্ভব না হয়, তবেঅনুরূপ সদস্য ব্যতিরেখেই গ্রাম আদালত গঠিত হইবে এবং উহা বৈধভাবে উহারকার্যক্রম চালাইতে পারিবে।
৬। গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, ইত্যাদিঃ
(১) যে ইউনিয়নে অপরাধ সংঘঠিত হইবে বা মামলার কারন উদ্ভব হইবে, বিবাদেরপক্ষগন সাধারনতঃ সেই ইউনিয়নের বাসিন্দা হইলে, উপ-ধারা (২) এর বিধানবলীসাপেক্ষে, গ্রাম আদালত গঠিত হইবে এবং উক্তরূপ মামলার বিচার করিবার এখতিয়ারসংশ্লিষ্ট গ্রাম আদালতের থাকিবে।
(২) যে ইউনিয়নে অপরাধ সংঘঠিত হইবে বা মামলার কারন উদ্ভব হইবে, বিবাদেরএকপক্ষ সেই ইউনিয়নের বাসিন্দা হইলে এবং অপর পক্ষ ভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দাহইলে , যে ইউনিয়নের মধ্যে অপরাধ সংঘঠিত হইবে বা মামলার কারন উদ্ভব হইবে, সেই ইউনিয়নে গ্রাম আদালত গঠিত হইবে; তবে পক্ষগন ইচ্ছা করিলে নিজ ইউনিয়নহইতে প্রতিনিধি মনোনীত করিতে পারিবে।
৭। গ্রাম আদালতের ক্ষমতা।--
(১)এই আইনের ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে ,গ্রাম আদালত তফসিলের প্রথমঅংশে বর্নিত অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে কেবলমাত্র অনধিক পঁচিশহাজার টাকা ক্ষতিপূরন প্রদানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে ।
(২) গ্রাম আদালত তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্নিত বিষয়বলীর সহিত সম্পর্কিতকোন মামলার অনুরূপ বিষয়ে তফসিলে উলিখিত পরিমান অর্থ প্রদানের জন্য আদেশপ্রদান করিতে বা সম্পত্তির প্রকৃত মালিককে সম্পত্তি বা উহার দখল প্রতার্পনকরিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
৮। গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া ও আপিল।--
(১) গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত বা চার-এক (৪ঃ ১) সংখ্যাগরিষ্ঠভোটে বা চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে তিন -এক (৩ঃ ১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীতহইলে উক্ত সিদ্ধান্ত পক্ষগনের উপর বাধ্যকর হইবে এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী কার্যকর হইবে।
(২) গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত তিন-দুই (৩ঃ ২ ) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীতহইলে ,সংক্ষুদ্ধ পক্ষ,উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের ত্রিশ দিনের মধ্যে, নির্ধারিতপদ্ধতিতে--
(ক) মামলাটি তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিতকোন অপরাধের সহিত সম্পর্কিত হইলে , এখতিয়ার সম্পন্ন প্রথমশ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপিল করিতে পারিবে ;এবং
(খ) মামলাটি তফসিলের দ্বিতীয় অংশেবর্নিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত হইলে ,এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ আদালতেআপীল করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে আপিলের ক্ষেত্রে ,ক্ষেত্রমত, সংশিষ্ট প্রথমশ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা সহকারী জজ আদালতের নিকট যদি সন্তোষজনক ভাবেপ্রতীয়মান হয় যে, বিবেচ্য ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত সুবিচার করিতে ব্যর্থহইয়াছে ,তাহা হইলে, ক্ষেত্রমত সংশিষ্ট প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতবা সহকারী জজ আদালত গ্রাম আদালতের উক্ত সিদ্ধান্ত বাতিল বা পরিবর্তন করিতেপারিবে অথবা পুনবির্বেচনার জন্য মামলাটি গ্রাম আদালতের নিকট ফেরত পাঠাইতেপারিবে।
(৪) আপততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন ,এই আইনেরবিধানাবলী অনুযায়ী গ্রাম আদালত কর্তৃক কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহীত হইলে উহাঅন্য গ্রাম আদালতসহ অন্য কোন আদালতে বিচার্য হইবে না।
৯। গ্রাম আদালতের সিদ্ধন্ত কার্যকরকরন।--
(১) গ্রাম আদালত কোন ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরন প্রদানের জন্য অথবা সম্পত্তিবা উহার দখল প্রত্যার্পন করিবার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করিলে, উক্ত বিষয়েনির্ধারিত পদ্ধতিতে ,আদেশ প্রদান করিবে এবং তাহা নির্দিষ্ট রেজিস্টারেলিপিবদ্ধ করিবে।
(২) গ্রাম আদালতের উপস্থিতিতে উহার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাবী মিটানো বাবদকোন অর্থ প্রদান করা হইলে অথবা কোন সম্পত্তি অর্পন করা হইলে গ্রাম আদালত ,ক্ষেত্রমত,উক্ত অর্থ প্রদান বা সম্পত্তি অর্পন সংক্রান্ত তথ্য উহাররেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে।
(৩) যে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদানের জন্য গ্রাম আদালন কর্তৃক আদেশপ্রদান করা হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত অর্থ প্রদান করা না হয় ,সেইক্ষেত্রে চেয়ারম্যান উহা ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া কর আদায়ের পদ্ধতিতে Public Demands Recovery Act, 1913 (Act III of 1913)এর অধীনে আদায় করিয়াক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে প্রদান করিবে।
(৪) যে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদান না করিয়া অন্য কোন প্রকারে দাবি মিটানসম্ভব, সেই ক্ষেত্রে উক্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর করিবার জন্য বিষয়টি এখতিয়ারসম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে উপস্থাপন করিতে হইবে এবং অনুরূপ আদালত ঐ সিদ্ধন্তকার্যকর করিবার জন্য এইরূপ ব্যবস্থা গ্রহন করিবে যেন ঐ আদালত কর্তৃকই উক্তসিদ্ধন্ত প্রদান করা হইয়াছে।
(৫) গ্রাম আদালত উপযুক্ত মনে করিলে তৎকর্তৃক নির্ধারিত কিস্তিতে ক্ষতিপূরনের অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবে।
১০। সাক্ষীকে সমন দেওয়া ,ইত্যাদির ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত ক্ষমতা্--
(১) গ্রাম আদালত যে কোন ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হইতে এবং সাক্ষী দেওয়ারজন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবার জন্য সমন দিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে-
(ক) দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১৩৩ উপ-ধারা (১) এ যেব্যক্তিকে স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে তাহাকেব্যক্তিগত ভাবে হাজির হইতে নির্দেশ দেওয়া যাইবে না।
(খ) গ্রাম আদালত যদি যুক্তিগতভাবে মনে করে যে,অহেতুকবিলম্ব, খরচ বা অসুবিধা ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে হাজির করা সম্ভব নয়, তবেআদালত সেই সাক্ষীকে সমন দিতে বা সেই সাক্ষীর বিরুদ্ধে প্রদত্ত সমন কার্যকরকরিতে আগ্রহ্য করিতে পারিবে;
(গ) গ্রাম আদালতের এখতিয়ার বর্হিভূত এলাকায় বসবাসকারী কোন ব্যক্তির ভ্রমন ও অন্যান্য খরচ নির্বাহ বাবদ,আদালতের বিবেচনা মতে , পর্যাপ্ত অর্থ তাহাকে প্রদানের জন্য আদালতে জমা দেওয়া না হইলে, গ্রাম আদালতঐ ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবারজন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না;
(ঘ) গ্রাম আদালত রাষ্ট্রীয় বিষয়াবলী সম্পর্কিত কোন গোপনীয়দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারী রেকর্ড দাখিল করিবার জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশপ্রদান করিবে না বা সংশিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীতঅনুরূপ গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারি রেকর্ড হইতে আহরিত কোন সাক্ষ্যপ্রদানের জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিবে না।
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন জারীকৃত সমন ইচ্ছাপূর্বক অমান্যকরিলে, গ্রাম আদালত অনুরূপ অমান্যতা আমলযোগ্য অপরাধ গন্যে অভিযুক্তব্যক্তিকে, তাঁহার বক্তব্য পেশের সুযোগ প্রদান সাপেক্ষে, অনধিক ৫০০/- টাকাজরিমানা করিতে পারিবে।
১১। গ্রাম আদালতের অবমাননা।- (১) কোন ব্যক্তি আইনসংগত কারন ব্যতীত যদি-
(ক) গ্রাম আদালত বা উহার কোন সদস্যকে আদালতের কার্যক্রম চলাকালেঅশালীল কথাবার্তা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আক্রমণাত্মক বা অন্যবিধ আচরন দ্বারাকোন প্রকার অপমান করেন; বা
(খ) গ্রাম আদালতের কার্যক্রমে কোনরুপ ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন; বা
(গ) গ্রাম আদালতের আদেশ স্বত্তেও, কোন দলিল দাখিল বা অর্পন বা হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন; বা
(ঘ) গ্রাম আদালতের যে প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি বাধ্য, সেইরুপ কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন; বা
(ঙ) সত্য কথা বলিবার শপথ গ্রহন করিতে বা গ্রাম আদালতের নির্দেশমোতাবেক তাহার প্রদত্ত জবানবন্দীতে স্বাক্ষর করিতে অস্বীকার করেন---
তাহা হইলে তিনি গ্রাম আদালত অবমাননায় দায়ে অপরাধী হইবেন।
(২) উপ- ধারা (১) এর অপরাধের ক্ষেত্রে, আদালতের নিকট কোন অভিযোগ পেশকরা না হইলেও, গ্রাম আদালত অনুরুপ অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচারকরিতে পারিবে এবং তাহাকে অনধিক পাঁচশত টাকা জরিমানা করিতে পারিবে।
১২। জরিমানা আদায়- (১) ধারা ১০ ও ১১ এর অধীন ধার্যকৃত জরিমানাপরিশোধ করা না হইলে গ্রাম আদালত সংশ্লিষ্ট তথ্যসহ উক্ত ধার্যকৃত জরিমানারপরিমান এবং উহা পরিশোধ না হওয়ার বিষয় লিপিবদ্ধ করিয়া উহা আদায়ের জন্যএখতিয়ার সম্পন্ন ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট সুপারিশ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সুপারিশ প্রাপ্ত হইবার পর সংশ্লিষ্টম্যাজিষ্ট্রেট ফৌজদারী কার্যবিধির বিধান মোতাবেক উক্ত জরিমানা আদায় করিবারজন্য এইরুপ ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন যেন উহা তদ্কতৃক ধার্য হইয়াছে এবং অনুরুপজরিমানা অনাদায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করিতেপারিবে।
(৩) ধারা ১০, ১১ বা উপ-ধারা (২) এর অধীন আদায়কৃত সমস্ত জরিমানা ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে জমা হইবে।
১৩। পদ্ধতি।- (১) এই আইনে ভিন্নরুপ কোন বিধান না থাকিলে, Evidence Act, 1872 (Act 1 of 1872), ফৌজদারী কার্যবিধি, এবং দেওয়ানী কার্যবিধিরবিধানাবলী কোন গ্রাম আদালতে আনীত মামলায় প্রযোজ্য হইবে না।
(২) গ্রাম আদালতে আনীত সকল মামলার ক্ষেত্রে Oaths Act, 1873 (Act X of 1873)এর
section 8,9,10 ও11 প্রযোজ্য হইবে।
(৩) কোন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে কোন মামলাদায়ের করা হইলে, তিনি যদি এই মর্মে আপত্তি উত্থাপন করেন যে, কথিত অপরাধতাহার সরকারী দায়িত্ব পালনকালে বা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সংগঠিত হইয়াছে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ বিচারের জন্য তাহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষেরপূবানুমোদনের প্রয়েজন হইবে।
১৪। আইনজীবী নিয়োগ নিষিদ্ধ।- অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক নাকেন, গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত কোন মামলা পরিচালনার জন্য কোন পক্ষ কোন আইনজীবীনিয়োগ করিতে পারিবেন না।
১৫। সরকারী কর্মচারী, পর্দানশীল বৃদ্ধ মহিলা এবং শারীরিকভাবে অক্ষমব্যক্তির পক্ষে প্রতিনিধিত্ব।- (১) আদালতের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমনকোন সরকারী কর্মচারী যদি তাহার ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশসহ এই মর্মেআপত্তি উত্থাপন করেন যে, তাহার ব্যক্তিগত উপস্থিতির ফলে সরকারী দায়িত্বপালন ক্ষতিগ্রস্থ হইবে, তাহা হইলে আদালত তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবেক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধিকে তাহার পক্ষে গ্রাম আদালতের সম্মুখে হাজিরহইবার জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
(২) গ্রাম আধালতের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমন কোন পর্দানশীল বাবৃদ্ধ মহিলা এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি আদালতে উপস্থিত হইয় সাক্ষপ্রদান করিতে অসমর্থ হইলে আদালত তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্তকোন প্রতিনিধিকে তাহার পক্ষে আদালতের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য অনুমতিপ্রদান করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) বা (২) এর অধীনে নিযুক্ত কোন প্রতিনিধি কোনরূপ পারিশ্রমিক গ্রহন করিতে পারিবেন না।
১৬। কতিপয় মামলার স্থানান্তর।- (১) যেক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটমনে করেন যে, তফসিলের ১ম অংশে বর্নিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত গ্রাম আদালতেবিচারাধীন কোন মামলার পরিস্থিতি এইরুপ যে জনস্বার্থে ও ন্যায়বিচারেরস্বার্থে কোন ফৌজদারী আদালতে উহার বিচার হওয়া উচিত, সেক্ষেত্রে, এই আইনেযাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও , তিনি গ্রাম আদালত হইতে উক্ত মামলাপ্রত্যাহার করিতে এবং বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য উহা ফৌজদারী আদালতে প্রেরনেরনির্দেশ দিতে পারিবেন।
(২) কোন গ্রাম আদালত যদি মনে করে যে, উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত কোনবিষয় সম্পর্কিত গ্রাম আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় ন্যায়বিচারের স্বার্থেঅপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিৎ, তাহা হইলে, উক্ত আদালত, মামলাটির বিচার ওনিষ্পত্তির জন্য উহা ফৌজদারী আদালতে প্রেরনের নির্দেশ দিতে পারিবে।
১৭। পুলিশ কর্তৃক তদন্ত।- এই আইনে যাহা কিছু থাকুক না কেন, কোনমামলার বিষয়বস্ত্ত তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিত অপরাধ সম্পর্কিত হওয়ার কারনেপুলিশ সংশ্লিষ্ট আমলযোগ্য মামলার তদন্ত বন্ধ করিবে না; তবে যদি কোন ফৌজদারীআদালতে অনুরুপ কোন মামলা আনীত হয় তাহা হইলে, উক্ত আদালত উপযুক্ত মনেকরিলে, মামলাটি এই আইনের বিধান মোতাবেক গঠিত কোন গ্রাম আদালতে প্রেরনেরনির্দেশ দিতে পারিবে।
১৮। বিচারাধীন মামলাসমূহ।- এই আইন মোতাবেক বিচারযোগ্য যে সকল মামলাএই আইন বলবৎ হইবার অব্যবহিত পূর্বে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী আদালতেবিচারাধীন রহিয়াছে, উহাদের উপর এই আইন প্রযোজ্য হইবে না, এÿং অনুরূপ মামলাঅনুরূপ আদালাত কর্তৃক এইরূপে মীমাংসা করা হইবে যেন এই আইন প্রনীত হয় নাই।
১৯। অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা।- সরকার, সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপনদ্বারা, যে কোন এলাকা বা এলাকাসমূহ বা যে কোন মামলা বা যে কোন শ্রেনীরমামলাসমূহ বা যে কোন সম্প্রদায়কে এই আইনের সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগহইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
২০। বিধিমালা প্রনয়নের ক্ষমতা।- এই আইনের উদ্দেশ্য পূরনকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রনয়ন করিতে পারিবে
২১। রহিতকরন ও হেফাজত।- (১) The Village Court Ordinance, 1976 (Ordinance No. LXI of 1976), অতঃপর রহিত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লেখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উক্তরুপ রহিত হওয়া সত্ত্বেও, রহিত অধ্যাদেশ এর অধীন-
(ক) বিচারাধীন মামলাসমূহের ক্ষেত্রে, মামলার সিদ্ধান্তবাস্তবায়নসহ, উহাদের নিষ্পত্তি এইরুপে নিষ্পন্ন হইবে, যেন এই আইন প্রনীত হয়নাই;
(খ) প্রনীত সকল বিধি, এই আইনের বিধানাবলীর সহিতসামঞ্জস্যপূর্ন হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, কার্যকরথাকিবে।
তফসিল
প্রথম অংশঃ ফৌজদালী মামলাসমূহ
১। দন্ডবিধির ধারা ৩২৩ বা ৪২৬ বা ৪৪৭ মোতাবেক কোন অপরাধ সংঘটন করা, বে-আইনী জনসমাবেশ সাধারন উদ্দেশ্যে হইলে এবং উক্ত বে - আইনী জনসমাবেশে জড়িতব্যক্তির সংখ্যা দশের অধিক না হইলে দন্ডবিধির ১৪৩ ও ১৪৭ ধারা, ১৪১ ধারা এরতৃতীয় বা চতুর্থ দফার সহিত পঠিতব্য।
২। দন্ডবিধির ধারা ১৬০, ৩৩৪, ৩৪১, ৩৪২, ৩৫২, ৩৫৮, ৫০৪, ৫০৬ (প্রথম অংশ) ৫০৮, ৫০৯ এবং ৫১০।
৩। দন্ডবিধির ধারা ৩৭৯, ৩৮০ ও ৩৮১ যখন সংঘটিত অপরাধটি গবাধিপশু সংক্রান্ত হয় এবং গবাদিপশুর মূল্য অনধিক পঁচিশ হাজার টাকা হয়।
৪। দন্ডবিধির ধারা ৩৭৯, ৩৮০ ও ৩৮১ যখন সংঘটিত অপরাধটি গবাদিপশু ছাড়াঅন্য কোন সম্পত্তি সংক্রান্ত হয় এবং উক্ত সম্পত্তির মূল্য অনধিক পঁচিশহাজার টাকা হয়।
৫। দন্ডবিধির ধারা ৪০৩, ৪০৬, ৪১৭ ও ৪২০ যখন অপরাধ সংশ্লিষ্টি অর্থের পরিমান অনধিক পঁচিশ হাজার টাকা হয়।
৬। দন্ডবিধির ধারা ৪২৭, যখন সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মূল্য অনধিক পঁচিশ হাজার টাকা হয়।
৭। দন্ডবিধির ধারা ৪২৮ ও ৪২৯ যখন গবাদিপশুর মূল্য অনধিক পঁচিশ হাজার টাকা হয়।
৮। Cattle-Trespass Act, 1871 (Act I of 1871) এর section 24, 26, 27।
৯। উপরিউক্ত যে কোন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা উহা সংঘটনের সহায়তা প্রদান।
দ্বিতীয় অংশঃ দেওয়ানী মামলাসমূহ
দ্বিতীয় অংশঃ দেওয়ানী মামলাসমূহ
১। কোন চুক্তি, রশিদ বা অন্য কোন দলিল মূলে প্রাপ্য অর্থ আদায়ের জন্য মামলা। ২। কোন অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা উহার মূল্য আদায়ের জন্য মামলা। ৩। স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বৎসরের মধ্যে উহার দখল পুনরুদ্ধারের মামলা। ৪। কোন অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরন আদায়ের জন্য মামলা। ৫। গবাদিপশু অনাধিকার প্রবেশের কারনে ক্ষতিপূরনের মামলা। ৬। কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরন আদায়ের মামলা। |
যখন দাবীকৃত অর্থের পরিমান অথবা অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য অথবা অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির মূল্য অনাধিক পঁচিশ হাজার টাকা হয়। |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস